ইসলাম যখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়

Share

আমাদের সমাজ যেভাবে তৈরি করেছে ইসলামি মৌলবাদীরা এক রকম জোরপূর্বক আমাদের উপর এসকল বিষয় নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করে যেন ধর্ম প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। কত দিন এসকল বিষয় মানুষের কাছ থেকে আড়াল করা যাবে? মানুষ কি বোকা? আমি কথা বলি বা আপনি কথা বলেন যারা আমার লেখা নিয়মিত পড়েন আপনারা বলুন আমি ভুল কিছু বলছি কিনা? গালালালি করে জোরপূর্বক ধর্মকে আমার উপড়ে তো ছাইপিয়ে দিতে পারবেন না। অনেক তো হল এবার বন্ধ করেন ।

ইসলামের মহানবী মক্কা বিজয়ের পর মক্কার জনগণের সামনে দুটো পথ খোলা রেখেছিলো, হয় ইসলাম কবুল করতে হবে নয়তো মক্কা ছাড়তে হবে কপর্দকহীন অবস্থায়। এরপরও প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। এবং যুগ যুগ ধরে কাবা ঘরে পূজিত ৩৬০টি মূর্তি ভেঙেছিল। তার অনুসারীদের সামনে আদর্শ পৃথিবীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করতেই মূর্তিগুলো ধ্বংস করা হয়েছিলো। মুসলমানের পৃথিবী হবে পূজার মূর্তিশূন্য তথা অন্যসকল ধর্মবিশ্বাসমুক্ত। একমাত্র মোহাম্মদ এবং তার বানানো আল্লাহই হবে মানুষের একমাত্র পূজার বিষয়।

মুসলমান আজও গর্বভরে সে পথ অনুসরণ করে যাচ্ছে। সুযোগ পেলেই তারা অন্য ধর্মকে আঘাত করছে। তাদের সামনে আদর্শ এবং একমাত্র সঠিক দেশের উদাহরণ সৌদি আরব, যেখানে নেই অন্য ধর্মের প্রতি এবং তার অনুসারীদের প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ। বিধর্মী যদিও মানুষ, কিন্তু তারা যেহেতু অবধারিতভাবে নরকে যাবেই, কাজেই তাঁদেরকে পৃথিবীতেই নরকবাসীর অমর্যাদা দেয়া হয়। সেই দেশটিতে মানুষের স্বীকৃতি নেই, কেবল মুসলমানের স্বীকৃতি আছে।

জীবনে অন্তত একবার মক্কা-মদিনা দর্শনের জন্য প্রতিটি মুসলমানের মধ্যে যে আকুলতা থাকে, আমরা তা জানি। তাদের তীর্থ সেখানে, তাদের নবীর জন্মস্থান, তাদের ধর্মের জন্মস্থান। মক্কা পবিত্র নগরী। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি, সারা পৃথিবীর ওপর শয়তান তার রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করত পারলেও মক্কা নগরীতে কখনো প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি দাজ্জাল নাকি মক্কার গেটে দাঁড়িয়ে থাকবে, ভেতরে যেতে পারবে না! মক্কাকে পবিত্র করা হয়েছে মোহাম্মদ এবং তার পূর্বপুরুষ যে সমস্ত মূর্তির পূজা করেছিলো, সে সমস্ত মূর্তি ধ্বংস করে এবং অস্ত্রের মুখে অবিশ্বাসীদের দেশত্যাগে বাধ্য করে।

মুসলমানের আদর্শ – পৃথিবীর একমাত্র ক্রাইটেরিয়া পৃথিবীকে কাফেরশূন্য হতে হবে বা তাদেরকে মুসলমানের পদানত হয়ে থাকতে হবে। সেখানে শিক্ষা, সভ্যতা, উন্নতি বলে কিছু নেই। কল্পনাশক্তি বা মুক্তচিন্তা নিষিদ্ধ। দুনিয়ার জীবন কিছুই না তাদের কাছে। গরু-ছাগলের মত কোনোমতে জীবন কাটিয়ে পরকালে হুর নিয়ে রঙ্গলীলা করাই তাদের ধ্যান-জ্ঞান।

মুসলমানরা তাদের নবীর দেখিয়ে দেয়া পথ অনুসরণ করে তার গড়া পবিত্র নগরীর আদলে একটা পৃথিবীর স্বপ্নই শুধু দেখে না, তারা এটাও বিশ্বাস করে, এরকম একটা পৃথিবী অবশ্যই হবে এবং সেই “হওয়া”কে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য তারা নিজেদের জীবন, সম্ভাবনা সব কিছু উৎসর্গ করে। এই বিশ্বাস যার নেই, সে মুসলমান-ই না। তাই ৭০ বছরের বেশি বয়সের বৃদ্ধকে বলতে শুনি: মা, বাবা, স্ত্রী, পুত্র, কন্যাকে ভালোবাসার আগে আল্লাহ ও তাঁর নবীকে ভালবাসতে হবে এবং জিহাদ করতে হবে।

এসকল বিষয়ে কথা বল্যতে গেলে কথা শেষ হবে না। আমরা ইচ্ছা করে কেউ নাস্তিক হয় না। এসকল বিষয় সামনে আসলে ধর্মের উপর বিশ্বাস রাখা যায় না। যদি ধর্ম এসকল বিষয়ে শিক্ষা দেই আর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ শুরু করি তাহলে আজকের দুনিয়ায় মনুষ্যত্বের জায়গা কোথায়? আমরা আমার ধর্ম ভালো অর ধর্ম খারাপ, আমি যা বিশ্বাস করি তাই শ্রেষ্ঠ বাকি সব ফালতু এই ধারনায় চলি তাহলে মানবতার জায়গা কোথায়?